সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:::
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওর সর্বত্র এখন গরু চোর আতংক বিরাজ করছে। গ্রামে গঞ্জে বেশিরভাগ দেশি গরু নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে মোটা তাজা করে কোরবানীর ঈদে বিক্রি করে লাভের আসা নিয়ে থাকা সাধারণ মানুষজন এখন সেসব গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। অনেকে এখন নিজেদের গরু চোরের দল থেকে বাঁচাতে গরুর সাথে গোয়াল ঘরেই রাত কাটাচ্ছেন। আবার অনেকে পাহারাদার নিয়োগ করেছে। সবচেয়ে বেশি আতংকে আছে ঘনবসতি থেকে কিছুটা দূরে থাকা বাড়ির মালিকরা। এধরনের বাড়ির মধ্যে যাদের গরু আছে তারা সপরিবারে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভাদিতলা হাসিনা পাড়ার বাসিন্দা হালিম বলেন, আগেও কোরবানীর ঈদের সময় গরু মোটা তাজা করে বাজারে বিক্রি করেছি। এবারও ৩ টি গরুমোটা তাজা করেছি। আমার ধারনা মতে প্রতিটি গরু বাজারে উঠালে ৮০/৯০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হবে। তবে এখন আতংকে আছি গরু চুরি নিয়ে।
সদর উপজেলার পোকখালী এলাকার বজল বলেন, প্রতি বছর কোরবানীর ঈদ আসলে গরু চোরের উৎপাত সিমাহীন বেড়ে যায়। বর্তমানে এলাকায় যাদের বাড়িতে গরু আছে তারা বেশিরভাগই গোয়াল ঘরে রাত কাটায়, আমি নিজে পালা করে গোয়াল ঘরে থাকি। আবার অনেকে আছে কয়েক বাড়ি মিলে পাহারাদার নিয়োগ করেছে। এ বিষয়ে স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদের কাছে আবেদন করলে তারা পাহারাদার দেয়ার কথা থাকলেও এখনো দেয়নি।
সদর উপজেলার জালালাবাদ এলাকার আলম বলেন, এখানে চোর, স্থানিয় প্রভাবশালী নেতা মিলে একটি সিন্ডিকেট হয়ে গরু নিয়ে নানান ধরনের তাল বাহানা করে। আগে এ ধরনের বহু কিছু আমরা দেখেছি। আসলে কোরবানীর ঈদ আসলে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ি কিছু বাড়তি টাকা আয় করার জন্য গরু কিনে এনে বাজারে বিক্রি করে। কিন্তু গরু চোরের দল তাদের সেই স্বপ্নকে মাটিতে নামিয়ে ফেলে । প্রতিবাদ করলে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়।
সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ইসলাম বলেন, ইউনিয়নে ইতিমধ্যে গরু চোর নিয়ে আতংক ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। এলাকার বেশিরভাগ ্স্থানিয় খামারী রাত জেগে তাদের গরু পাহারা দিচ্ছে। অনেকে গোয়াল ঘরে গরুর সাথে থাকছে তবুও আতংক না কাটায় গরুর গলার রশির সাথে নিজের শরীরের সাথে বেধে রেখেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আলাপকালে সদর উপজেলার ইসলামাবাদ এলাকার খামারী মকবুল বলেন, ১ বছর আগে আমার বাড়ি থেকে এক সাথে ৩ টি গরু চুরি হয়েছিল। অনেক খোঁজাখুজির পরও গরু গুলো পায়নি। পরে খবর পেয়েছিলাম গরুগুলো একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল নিয়ে গেছে। তিনি বলেন আমরা পুলিশের কাছে গেলেও তারা কোন সহযোগিতা করে না। উল্টো নানান ভাবে হয়রানী করে।
সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নজির বলেন, আমাদের বাড়ি ঘনবসতি থেকে একটু দূরে। অনেক বিল বা ধানী জমি পার হয়ে আমাদের বাড়িতে আসতে হয়। তাই আমরা গরু নিয়ে খুবই আতংকে আছি। বর্তমানে এলাকায় গরু চোর নিয়ে খুবই আতংক বিরাজ করছে।
ইসলামাবাদ এমইউপি আবদুর রাজ্জাক বলেন, গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে গরু থাকে আর গরু নিয়ে বর্তমানে সবাই খুব আতংকে আছে। অনেক সাধারণ মানুষ আমার কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবহিত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আহবান করেছি।
ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম বলেন, অনেক দূর দূরান্তে মানুষ গরু নিয়ে তাদের আতংকের কথা বলছে। পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে জোরালো ভুমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করেছি।
পাঠকের মতামত: